খাদ্য সহায়িকা

কি খাবেন আর কি খাবেন না...

যুক্তরাজ্যের ডাঃ ডেভিড আনউইন যে খাদ্য সহায়িকা ব্যাবহার করে তাঁর রোগীদের অনেকেকে ২য় ধরনের ডায়বেটিস  থেকে সারিয়ে তুলেছেন, নিচে তাঁর একটি চিত্র দেয়া হল। 

ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে রাখতে চাইলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।

অনুবাদঃ

ইউ কে এর ডাঃ ডেভিড আনউইন প্রণীত 

২য় ধরনের ডায়বেটিকদের জন্য সীমিত শর্করা খাদ্যাভ্যাস (নোরউড ডায়েট চার্ট নামে পরিচিত)

২য় ধরনের ডায়বেটিস অসুখটি হলে, আপনার দেহের বিপাক ব্যাবস্থা আগের মত শর্করা জাতীয় খাবার সহ্য করতে পারে না, তাই এমন খাবার খাওয়া বিশেষ ভাবে কমিয়ে আনতে হয়। 

চিনি একদম খাবেন না। তবে ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং রাস্পবেরি খাওয়া যাবে। কেক ও বিস্কুট হচ্ছে, চিনি এবং শ্বেতসারের মিশ্রণ, যা খেলে, আরও বেশী খাওয়ার ইচ্ছা হবেই; এগুলো আপনার ক্ষুধা আরও বাড়িয়ে দেয়।

শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবারগুলো খুব কম খাবেন। মনে রাখবেন, এই খাবারগুলো অতি দ্রুত হজম হয়ে অকল্পনীয় পরিমাণের চিনি তে পরিণত হয়। সম্ভব হলে, সাদা রঙ্গের খাবারগুলো যেমন, রুটি, পাউরুটি, পাস্তা, ভাত, বা নাস্তার সিরিয়াল, খুব কম খাবেন।

সব সবুজ শাক বা সালাদ যত ইচ্ছে খেতে পারেন। যত পারবেন সাদা খাবারকে সবুজ দিয়ে প্রতিস্থাপন করুন, যেন পেট ভরে খেতে পারেন। আলুভর্তা, ভাত বা পাস্তার পরিবর্তে ব্রকলি, শিম খান এবং এগুলো দিয়ে ঝোল, সেদ্ধ, পাতরি বা তরকারি, হরেক রকম খাবার বানিয়ে খান। ঘরে স্যুপ বানিয়ে খান, অফিসেও নিয়ে যেতে পারবেন। মাইক্রোওয়েভ দিয়ে গরম করেই খেতে পারবেন। এতে ব্যবহার করতে পারেন মাশরুম, টমেটো এবং পেয়াজ। ফুলকপি কুঁচি করে কেটে ভাতের পরিবর্তে খেতে পারেন। 

ফল খাওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। গ্রীষ্মকালীন ফল যেমন কলা, কমলা, আঙ্গুর, আম বা আনারস এর মধ্যে অতি মাত্রায় চিনি থাকে, যারা আপনার খাওয়ার ইচ্ছা বাড়িয়ে দেবে। বেরি জাতীয় ফল গুলো খাওয়া যায় যেমন ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি ইত্যাদি।  আপেল ও নাস্পতিও খাওয়া যায়।

স্বাস্থ্যকর আমিষ খাবেন, যেমন মাংশ, ডিম (দিনে ৩ টা ডিম খেলে বেশী খাওয়া হয় না), মাছ - বিশেষ করে তৈলাক্ত যেমন ইলিশ, পাঙ্গাশ, স্যামন, মেকারেল, বা টুনা মাছ খেলে ক্ষতি নেই এবং যত ইচ্ছা খেতে পারবেন। পূর্ণ ননিজুক্ত দুধের টক দই এর সাথে জাম মিশিয়ে চমৎকার সকালের নাস্তা বানাতে পারেন। প্রক্রিয়াজাত মাংশ যা প্যাকেট বা কৌটায় কিনতে পাওয়া যায়, তা খুব স্বাস্থ্যকর নয়, তাই এগুলো যত কমিয়ে খাওয়া যায়, ততই ভালো।

পরিমিত পরিমাণ তেল-চর্বি খাওয়া যাবে, জলপাই তেল বা অলিভ অয়েল খুব উপকারী, মারজারিনের তুলনায় মাখন, খেতেও বেশী সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যের জন্যেও ভালো। শাক-ভাজির জন্য নারকেল তেল চমৎকার হয়। যে চারটি অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন তেল-চর্বি না ছাড়া পাওয়া যায় না, তা হল ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে। দয়াকরে মারজেরিন, কর্ণ অয়েল, সয়াবিন তেল, রাইস ব্রান অয়েল, ভেজিটেবল অয়েল গুলো খাবেন না।

চর্বি কমানো খাবার হতে সাবধান, সাধারণত এদের মধ্যে চিনি বা কৃত্রিম মিস্টিকারক মেশানো হয় স্বাদ বাড়াবার জন্য, যা ক্ষুধা বাড়াবে। ননী বা মাখন দিয়ে বানানো মেয়নেইজ এবং পেস্ত খাওয়া যাবে।

পনিরঃ খুব বেশী নয়।

পনির এর মধ্যে চর্বি এবং আমিষ, দুটোই অধিক পরিমাণে থাকে, তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়া উচিৎ।

যখন তখন হাল্কা নাস্তা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন, নয়তো বদ অভ্যাস হয়ে যাবে। তবে খুব ইচ্ছে হলে, লবণ ছাড়া আলমন্ড (কাঠ বাদাম) বা ওয়ালনাট (আখরোট) খাওয়া যেতে পারে ক্ষুধা দুর করার জন্য। মাঝে মাঝে ৭০% এর বেশী কালো চকলেট, অল্প পরিমাণে খাওয়া যাবে।

স্বাস্থ্যকর আমিষ ও চর্বির সাথে অনেক শাকসবজি খেলে আপনার পেট ভরবে সন্তোষজনকভাবে এবং সহসা খুধাও লাগবে না। 

সবশেষে, পানীয় এবং মিস্টিকারক নিয়ে বলছি। পরীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে যে, মিস্টিকারক খেলে তা আপনার মস্তিষ্ক কে ক্ষুধার অনুভূতি বাড়াতে উৎসাহিত করে এবং তখন আপনার ওজন কমানো কঠিন হয়ে যায়। ১০০ মিলি দুধের মধ্যেও ১ চা চামচ পরিমাণ চিনি আছে। তাই কালো চা, কফি, ভেষজ চা বা পানি খেতে পারেন। খুব দরকার হলে সামান্য দুধ নিতে পারেন, কিন্তু চিনি বা মিস্টিকারক নেবেন না পানিয়ের সাথে। মদ্যপান থেকেও দুরে থাকুন। এক টুকরা লেবু দিয়ে ঠাণ্ডা পানি খেতে পারেন। 

ঔষধ খাচ্ছেন? এই খ্যাদ্যাভ্যাস ব্যবহারের আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসক এর সাথে এই খাদ্যাভ্যাস নিয়ে আলচনা করে নেবেন।

কারো কারো লবণ খাওয়া বাড়াতে হতে পারে।


ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করা কিটো ডায়েট গাইড (এই ডায়েট প্রেসক্রিপশন করা ঔষধের মতো শক্তিশালী)ঃ
https://www.dietdoctor.com/se/wp-content/2014/10/no_sugar_no_starch_diet.pdf